নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের কাজী নগরে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে তিন সহোদর নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন, হারুন (৩৮),কামাল (৩৬), ও বাবলু (৩২)। নিহত তিন সহোদর কাজী নগর গ্রামের মোখছেদ উল্যাহর ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, একই গ্রামে ঈদ উপলক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। খেলার মধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে গোল দেওয়া নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে নিহত বাবলু একটি গোল দেওয়ার পর রফিক তা মেনে নেয়নি। এতে বাবলু ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের রফিককে মারধোর করে। পরে রফিক বাড়ির পার্শ্ব থেকে ধারালো অস্ত্রসহ তার সমর্থকদের নিয়ে এসে বাবলুকে কোপাতে থাকে। খবর পেয়ে বাবলুর বড় ভাই হারুন ঘটনাস্থলে এলে তাকে কোপায় এবং তাদের অপর সহোদর কামাল এলে তাকেও কুপিয়ে মেরে হত্যা করে। এভাবে সংঘর্ষে হারুন, বাবলু ও কামালকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন।
অপরদিকে নিহত ৩ সহোদরের ছোটভাই মোর্শেদ আলম জানায়, খেলায় সামন্য বিরোধ হলেও পুর্ব পরিকল্পিতভাবে রফিকের নেতৃত্বে খালেকের ছেলে রাজুসহ সাদ্দাম, আনোয়ার, শরিফ, আজিম, তাওহিদ, বেলাল তার ভাই বাবলুকে প্রথমে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তার বড় ভাই হারুন ও কামাল পালিয়ে বাড়ির দুটি ঘরে আশ্রয় নিলে তারা ঘরে ঢুকে সেখান থেকে বের করে এনে প্রকাশ্যে মাঠে কুপিয়ে হত্যা করে। তারা তাকে খোঁজ করলেও তিনি পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন।
এ ঘটনার সত্যাতা স্বীকার করে নাটেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল আমিন স্বপন জানান, নিহতরা স্থানীয়ভাবে মাদক, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত এবং এদের নামে থানায় মামলা রয়েছে। তবে রবিবার দুপুরে খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বরে তিনি শুনেছেন। তিনি শারিরিকভাবে অসুস্থ থাকায় ঘটনাস্থল যেতে পারেননি।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ফরিদ উদ্দিন জানান,কামালকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। অন্য দুজনকে আনা হয়নি।
সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফুল ইসলাম জানান, খেলায় বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে অভিযুক্তদের ধরার জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ জানান, খবর পেয়ে তিনি নিজেই ঘটনাস্থল গিয়েছেন। সামান্য খেলা নিয়ে তিন সহোদরকে পিটিয়ে হত্যা করা এটি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। অভিযুক্ত সকলকে আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের ধরার জন্য অভিযান চলছে।
Leave a Reply